শিক্ষা

নীলক্ষেতে ডাকসুর ব্যালট ছাপানোর তথ্য কর্তৃপক্ষকে জানায়নি সহযোগী ভেন্ডর: উপাচার্য

Icon

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮শে সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:৪৮

নীলক্ষেতে ডাকসুর ব্যালট ছাপানোর তথ্য কর্তৃপক্ষকে জানায়নি সহযোগী ভেন্ডর: উপাচার্য


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ব্যালট পেপার রাজধানীর নীলক্ষেতে ছাপানোর তথ্য সংশ্লিষ্ট সহযোগী ভেন্ডর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানায়নি বলে দাবি করেছেন উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান। তবে তিনি বলেন, ব্যালট পেপার ছাপানোর স্থান বা সংখ্যা ডাকসু নির্বাচনকে কোনোভাবে প্রভাবিত করে না।


আজ রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চ্যুয়াল ক্লাসরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য এ কথা বলেন। ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন-পরবর্তী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।


সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, সব নিয়ম মেনে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে একটি অভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে ব্যালট পেপার ছাপানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়। রেকর্ডসংখ্যক ভোটার ও প্রার্থী বিবেচনায় দ্রুততম সময়ে নির্ধারিত পরিমাণ ব্যালট ছাপানোর স্বার্থে মূল ভেন্ডরের সঙ্গে আলোচনা করে সমযোগ্য একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে একই টেন্ডারের অধীন কাজে সম্পৃক্ত করার অনুমতি দেওয়া হয়।


নীলক্ষেতে ব্যালট পেপার ছাপানোর তথ্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সহযোগী ভেন্ডর জানায়নি বলে দাবি করেন উপাচার্য। এ বিষয়ে সহযোগী ভেন্ডর যে ব্যাখ্যা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে দিয়েছে, তা পড়ে শোনান তিনি।


উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ বলেন, সহযোগী ভেন্ডরের তথ্য অনুযায়ী, সহযোগী প্রতিষ্ঠান নীলক্ষেতে ২২ রিম কাগজ দিয়ে ৮৮ হাজার ব্যালট ছাপায়, যা থেকে প্রিন্টিং, কাটিং, প্রি-স্ক্যান পর্ব শেষে নির্দিষ্ট পরিমাণে ব্যালট প্যাকেটে সিলগালা করে ৮৬ হাজার ২৪৩টি ব্যালট সরবরাহযোগ্য করা হয়। অতিরিক্ত ব্যালটগুলো প্রচলিত পদ্ধতিতে নষ্ট করে ফেলা হয়। ভেন্ডর আরও জানায়, নীলক্ষেতে কাটিং শেষে প্রি-স্ক্যান ও পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য তারা তাদের মূল অফিসে এনে প্রি-স্ক্যান সম্পন্ন করে নির্দিষ্ট পরিমাণে প্যাকেটে ভরে সিলগালা করে বিশ্ববিদ্যালয়কে সরবরাহ করে। তারা ব্যালট প্রস্তুতকরণ প্রক্রিয়ায় ও আনা নেওয়ায় চুক্তি মোতাবেক সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। ব্যস্ততার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে তারা নীলক্ষেতে ব্যালট প্রিন্টিং ও কাটিংয়ের বিষয়টি জানাতে ভুলে যায় বলে স্বীকার করে।


উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ বলেন, এটা পরিষ্কারভাবে অনুধাবনযোগ্য যে ব্যালট পেপার ছাপানোর স্থান বা সংখ্যা সুষ্ঠু নির্বাচনকে কোনোভাবে প্রভাবিত করে না। কারণ, ব্যালট পেপার ভোটের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত করতে কয়েকটি ধাপ সম্পন্ন করতে হয়। ব্যালট পেপার ছাপানোর পর তা নির্দিষ্ট পরিমাপে কাটিং করতে হয়। তারপর সুরক্ষা কোড আরোপ করে ওএমআর মেশিনে প্রি-স্ক্যান করে সেটা মেশিনে পাঠযোগ্য হিসেবে প্রস্তুত করতে হয়। এরপর চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তার সিলসহ সই ও কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার সই যুক্ত হলেই তা ভোট গ্রহণের জন্য উপযুক্ত হয়। এসব প্রক্রিয়া শেষ করে পূর্ণ সতর্কতার সঙ্গে ভোট গ্রহণ করা হয়েছে।


সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ বলেন, কার্যাদেশ অনুযায়ী, উপরিউক্ত প্রক্রিয়ায় চূড়ান্তভাবে ২ লাখ ৩৯ হাজার ২৪৪টি ব্যালট ভোট গ্রহণের জন্য প্রস্তুত করা হয়। মোট ভোটার ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন, ভোটারপ্রতি ব্যালট ৬টি। মোট ভোট দিয়েছেন ২৯ হাজার ৮২১ জন ভোটার। মোট ব্যালট ব্যবহার করা হয়েছে ১ লাখ ৭৮ হাজার ৯২৬টি। অবশিষ্ট ব্যালট আছে ৬০ হাজার ৩১৮টি।


ডাকসু নির্বাচনকে বিতর্কিত করার চেষ্টা শিক্ষার্থীদের রায়কে অসম্মানের শামিল

সিসিটিভি ফুটেজ ও ভোটারদের সই করা তালিকা প্রকাশের দাবির বিষয়ে উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ বলেন, কোনো প্রার্থী যদি সুনির্দিষ্ট কোনো সময়ের কিংবা কোনো একটি প্রাসঙ্গিক ঘটনা পর্যালোচনা করার জন্য সিসিটিভি ফুটেজ দেখতে চান, যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করতে হবে। কর্তৃপক্ষের মনোনীত বিশেষজ্ঞ বা মনোনীত ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারণ করে দেওয়া কোনো স্থানে, তা দেখা বা পর্যবেক্ষণ করা যাবে।


উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ আরও বলেন, ভোটারদের সই করা ভোটার তালিকা দেখানোর বিষয়ে তাঁরা আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের সঙ্গে অধিকতর আলোচনা করেছেন। এ বিষয়ে তাঁদের পরামর্শ হলো কোনো প্রার্থী যদি নির্দিষ্ট ও যৌক্তিক কারণে নির্দিষ্ট কারও সই পর্যবেক্ষণ করতে চান, সে ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করতে হবে। কর্তৃপক্ষের মনোনীত বিশেষজ্ঞ বা ব্যক্তির উপস্থিতিতে তা দেখানো যেতে পারে।